কোভিড-১৯ কে ঘিরে মিথ্যা খবর ও গুজব
কোভিড-১৯ কে ঘিরে মিথ্যা খবর ও গুজব
মিথ্যা খবর ও গুজব কোভিড-১৯ থেকে কোনো অংশে কম ক্ষতিকর নয়। সকলকেই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
কোভিড-১৯ কে ঘিরে মিথ্যা খবর ও গুজব
করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে মাইশা,
নিশি, সায়মা আর সামিদের স্কুল বন্ধ। বাইরে বের হওয়া বন্ধ, তাই সারাদিন ঘরেই থাকা হয়। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার
মাধ্যমে ওরা যোগাযোগ রাখে আর নানা বিষয়ে কথা বলে। আজ ওরা কথা বলছে কোভিড-১৯ নিয়ে ছড়ানো মিথ্যা খবর ও গুজব সম্পর্কে।
নিশি: বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ায় কোভিড-১৯ নিয়ে নানা ধরনের গুজব
ছড়িয়ে পড়েছে। ভাইরাসের থেকেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এসব গুজব।
সায়মা: এসব গুজব অবৈজ্ঞানিক ও
বাস্তব ভিত্তিহীন, তাই ক্ষতিকর এবং বিপদজনক।
মাইশা: মানুষ যখন আতঙ্কে থাকে ও অনিশ্চয়তায়
ভোগে তখনই গুজবের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। এর সাথে রাজনৈতিক বা
ধর্মীয় পক্ষপাতমূলক চিন্তা থাকলে তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে।
নিশি: সোশ্যাল মিডিয়ার
মাধ্যমে অথবা নির্ভরযোগ্য নয় এমন উৎস থেকে ফেক নিউজ আকারে এসব গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
সামি: সুস্থ ও নিরাপদ থাকতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে ও গুজবের ব্যাপারে সাবধান থাকতে হবে।
নিশি: গরম পানিতে গোসল করলে বা
পান করলে করোনা সংক্রমণ হবে না, তা সত্য নয়।
সায়মা: কিংবা রং চা, লেবুর রস, রসুন খেলে করোনা সংক্রমণ হয় না, এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে এগুলো করা হলে সে কিছুটা
ভালো বোধ করবে।
নিশি: রোদে বসে থাকলে বা গরম পরিবেশে
করোনা ভাইরাসে আক্রমণ করে না, এই ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
সামি: কমবয়স্কদের চেয়ে বৃদ্ধরা করোনা ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হয়,
এটা একেবারেই ভুল ধারণা।
স্পেস
নিশিঃ সকল বয়সের মানুষই আক্রান্ত হতে পারে। তবে কমবয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা ও স্বাস্থ্য অপেক্ষাকৃত ভালো হওয়ায় বৃদ্ধদের তুলনায় মৃত্যুর হার কম।
মাইশা: যারা ধূমপান করে
তাদের না
কি করোনা সংক্রমণ হয় না, এটাও গুজব।
সায়মা: বরং ধূমপান
করলে ফুসফুসের স্বাভাবিক ক্ষমতা যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই ধূমপায়ীদের জন্য কোভিড-১৯ বেশি ক্ষতিকর।
নিশি: দশ সেকেন্ড ধরে নিঃশ্বাস বন্ধ রাখলে যদি কাশি না হয়, অস্বস্থি
বোধ না
হয় তাহলে সে
করোনা থেকে মুক্ত, এসব কথার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
সায়মা: অ্যান্টবায়োটিক ব্যাকটিরিয়ার
ওপর কাজ করে, করোনা ভাইরাসের ওপর কাজ করবে না। তাই এটা করোনা ভাইরাসকে মারতে পারে না।
মাইশা: গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনো কার্যকর প্রতিষেধক বের হয়নি।
তাই এর
প্রতিষেধক আবিষ্কারের যত খবর আছে তার সবই মিথ্যা।
সামি: এগুলো বিশ্বাস করলে
দুষ্কৃতিকারীরা ও অসাধু ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে। পাশাপাশি আশ্বস্ত হয়ে অনেকে
সতর্কতা অবলম্বন করা বন্ধ করে দিলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নিশি: উগ্রবাদী সংগঠনগুলো এখন অনলাইনে বেশি তৎপর কারণ লকডাউনের কারণে তরুণ-তরুণীরা
এখন অনেক বেশি অনলাইনে অবস্থান করছে।
মাইশা: এই সংগঠনগুলো
ভাইরাস সম্পর্কিত নানা ভুল তথ্য ও মিথ্যা খবর প্রচার করে যুব সমাজকে প্রভাবিত করছে।
সামি: ধর্মের অবমাননা
ও অবিচারেরে কারণেই এই মহামারী সকলকে ধ্বংস করছে বলে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।
সায়মা: যেখানে সকল ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের লোক এতে আক্রান্ত হচ্ছে। ভাইরাস কারো
গায়ের রঙ, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক বিশ্বাস দেখে আক্রমণ করে না।
মাইশা: আর সকল ধর্মের ধর্মীয় নেতারাই উপাসনার পাশাপাশি ভাইরাস থেকে
নিরাপদ থাকার অভ্যাস চালু রাখতে বলেছেন।
সায়মা: তাই আমাদের
সচেতন থাকতে হবে। নতুন কিছু দেখলে সাথে সাথে শেয়ার না করে যাচাই-বাছাই করতে হবে।
মাইশা: নির্ভরযোগ্য তথ্য উৎস না
থাকলে তা বিশ্বাস করা যাবে না।
নিশি: চল, আমরা বন্ধুরা মিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভরযোগ্য তথ্যের উৎস দিয়ে বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে
এসব গুজব সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করি।
সামি: খুবই ভালো কথা। তাহলে ঘরে থাকার দিনগুলোতে আমরা সবার জন্য কিছু ভালো কাজ করতে পারবো।
ভাইরাসের সাথে সাথে দূরে থাকুন মিথ্যা খবর ও গুজব ...